বর্তমান সময়ে বিভিন্ন দিক থেকে শোনা যায় যে, মানুষ অনলাইনে প্রচুর টাকা ইনকাম করে রাতারাতি বড়লোক হয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের খবর ও তথ্য আমাদের আশেপাশে খুবই প্রচলিত। ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক এবং অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমগুলোতে এমন অনেকেই আছেন যারা নিজের ইনকাম শেয়ার করে, এবং তারা দাবি করে যে, অনলাইনে কাজ করে অল্প সময়ের মধ্যে তারা লাখপতি হয়ে গেছেন। এসব খবর দেখে অনেকেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন এবং প্রশ্ন করতে শুরু করেন

 

—এগুলো কি সত্যিই সম্ভব, নাকি সেগুলো শুধুমাত্র মিথ্যা বা বানোয়াট তথ্য?

 

অবশ্যই, অনলাইনে টাকা ইনকাম করা সম্ভব, কিন্তু সেটি রাতারাতি বা সহজে হবে এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। অনেক সময়, এমন মানুষ যারা রাতারাতি বড়লোক হওয়ার কথা বলেন, তারা হয়তো তাদের প্রচারণা বা পণ্য বিক্রির জন্য এসব দাবি করে। বাস্তবতা হলো, অনলাইনে সফল হতে হলে সঠিক জ্ঞান, কঠোর পরিশ্রম এবং ধৈর্য প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রেই সঠিক সুযোগ পাওয়ার মাধ্যমে আপনি অনলাইনে সফল হতে পারেন। এখানে ৯টি উপায় তুলে ধরা হলো, যেগুলো অনুসরণ করলে আপনি অনলাইনে আয় করার সম্ভাবনা বাড়াতে পারেন:

 

ফ্রীলান্সিংঃ ধরুন, আপনি একটি কাজ জানেন যা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে করা সম্ভব। হতে পারে সেটি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, ডাটা এন্ট্রি, অথবা আরও অনেক কিছু। এই ধরনের কাজের একটি দীর্ঘ তালিকা রয়েছে, এবং যদি আপনি এসব কাজের মধ্যে কোনো একটি জানেন বা শিখতে আগ্রহী হন, তবে আপনি খুব সহজেই অনলাইন মাধ্যমে কাজ করে আয় করতে পারেন। এখন প্রশ্ন আসে, তাহলে কিভাবে এই কাজগুলো করে আয় করবেন?

 

এটি খুবই সহজ, কিন্তু প্রথমত আপনাকে কিছু প্রস্তুতি নিতে হবে। আপনার প্রথম কাজ হবে ফ্রীলান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে একাউন্ট তৈরি করা। আপনি Gigtry Freelance Marketplace (https://www.gigtry.com)-এ একাউন্ট খুলে আপনার দক্ষতা উপস্থাপন করতে পারেন। এটি একটি নতুন এবং উদীয়মান মার্কেটপ্লেস যেখানে আপনি আপনার কাজের মাধ্যমে ক্লায়েন্টদের কাছে পৌঁছাতে পারবেন।

তবে, শুধু Gigtry-ই নয়, আরও অনেক জনপ্রিয় ফ্রীলান্সিং মার্কেটপ্লেস রয়েছে যেখানে আপনি আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কাজ খুঁজে পেতে পারেন:

 

Fiverr (https://www.fiverr.com) – যেখানে আপনি ছোট ছোট কাজের অফার দিয়ে ক্লায়েন্টদের কাছে পৌঁছাতে পারেন।
Upwork (https://www.upwork.com) – একটি বৃহৎ প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনাকে বিভিন্ন ধরণের কাজের জন্য আবেদন করতে হবে।
Freelancer (https://www.freelancer.com) – যেখানে আপনি বিভিন্ন প্রকল্পে বিড (Bid) করে কাজ পেতে পারেন।
Toptal (https://www.toptal.com) – একটি প্রিমিয়াম মার্কেটপ্লেস যা শুধুমাত্র উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন ফ্রীলান্সারদের গ্রহণ করে।
Guru (https://www.guru.com) – একটি ট্রাস্টেড প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি দীর্ঘমেয়াদী কাজ খুঁজে পেতে পারেন।
PeoplePerHour (https://www.peopleperhour.com) – যা বিশেষভাবে ঘণ্টা ভিত্তিক কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়।
SimplyHired (https://www.simplyhired.com) – এখানে আপনি বিভিন্ন ফ্রীলান্স কাজ এবং ফুলটাইম চাকরির সুযোগ পেতে পারেন।
99designs (https://www.99designs.com) – বিশেষ করে ডিজাইনারদের জন্য একটি মার্কেটপ্লেস যেখানে গ্রাফিক ডিজাইন কাজ পাওয়া যায়।

 

 

একবার আপনি এই সব মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট তৈরি করে ফেললে, তারপর সঠিকভাবে আপনার স্কিল এবং পোর্টফোলিও উপস্থাপন করতে হবে। এর মাধ্যমে ক্লায়েন্টদের কাছে আপনার দক্ষতা তুলে ধরতে পারবেন।

এছাড়া, আপনাকে আপনার কাজের মান উন্নত করতে হবে এবং নিয়মিত ক্লায়েন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। আপনি যদি একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে দক্ষ হন এবং ভালো মানের কাজ করতে পারেন, তবে খুব দ্রুত আপনি ফ্রীলান্স মার্কেটপ্লেসগুলোতে সফল হতে পারবেন।

 

ই-কমার্স ও ড্রপশিপিংঃ  ড্রপশিপিংয়ের মাধ্যমে আপনি শুধুমাত্র ওয়েবসাইটই নয়, ফেসবুক পেইজ বা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মেও পণ্য বিক্রি করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি Shopify, WooCommerce বা Wix-এর মতো প্ল্যাটফর্মে আপনার ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন এবং সেখান থেকেই পণ্য বিক্রি করতে পারেন। আবার, যদি আপনি ওয়েবসাইট তৈরি করতে না চান, তবে আপনি ফেসবুক পেইজ বা Instagram পেইজ ব্যবহার করে সহজেই পণ্য বিক্রি করতে পারেন।

ধরি, আপনি ফেসবুকে একটি পেইজ খুলেছেন যেখানে আপনি গ্যাজেটস, ফ্যাশন প্রোডাক্ট বা হোম ডেকর আইটেমস বিক্রি করছেন। আপনি সরবরাহকারী থেকে পণ্য নেওয়ার পর, আপনার পেইজে ছবি ও দাম দিয়ে পোস্ট করবেন। যখন গ্রাহক আপনার পেইজে পণ্যটি কিনবে, আপনি সরবরাহকারীকে অর্ডার দিবেন, এবং সরবরাহকারী সরাসরি গ্রাহকের কাছে পণ্য পাঠাবে। এখানে আপনি সরবরাহকারীর দামের উপর কিছুটা markup (কমিশন) রেখে বিক্রি করবেন।

এছাড়া, আপনি Instagram ব্যবহার করেও খুব সহজে পণ্য বিক্রি করতে পারেন। আপনার প্রোডাক্টের ছবি ও বিবরণ দিয়ে একটি আকর্ষণীয় feed তৈরি করুন এবং আপনার ফলোয়ারদের মাধ্যমে বিক্রির সুযোগ পেয়ে যান। Instagram Shopping feature ব্যবহার করে, আপনি সরাসরি আপনার প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারেন এবং অর্ডার পাওয়ার সাথে সাথে সরবরাহকারীকে পাঠিয়ে দেবেন।

আপনি যদি পণ্যের নকশা বা ব্র্যান্ডিংয়ের প্রতি মনোযোগ দেন, তাহলে ফেসবুক বা Instagram এর মাধ্যমে প্রচুর মানুষ আপনার শপে আসতে পারে এবং এটি একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে।

 

ব্লগিং এখন যেই মাধ্যমটির কথা বলব, সেটা হলো সবচেয়ে সহজ ইনকামের পদ্ধতি, এবং সেটি হলো ব্লগ পোস্ট লিখে ইনকাম করা। যেমনটা আপনি এখন দেখতে পাচ্ছেন টিপসট্রাই.কম (https://www.tipstry.com)-এ। এখানে আপনি কোনো ঝামেলা ছাড়া পোস্ট লিখে টাকা আয় করতে পারেন। টিপসট্রাই-এ প্রতি পোস্টের বিনিময়ে আপনি সর্বোচ্চ ৬০ টাকা ইনকাম করতে পারেন। আরো বিস্তারিত জানতে, নিচের পোস্টটি পড়ুন। আর যদি আপনি আরো বেশি ইনকাম করতে চান, তাহলে আপনি খুব সহজেই Blogger.com বা WordPress ব্যবহার করে একটি ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। এরপর, আপনি সেটি গুগল এডসেন্স বা অন্য কোনো মাধ্যমে মনিটাইজ (Monetize) করে আয় করতে পারেন। এটি একটি লাভজনক উপায়, যেখানে আপনার ব্লগ থেকে আসা ট্রাফিক অনুযায়ী আপনি ভালো আয় করতে পারবেন।